অশরীরী প্রেম পর্ব ১

শুরুর থেকে ক্লাসের সবচেয়ে সেরা দুই সুন্দরী
ইভা ও সাদিয়া। দু’জনেই ক্লাসের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম ছেলে
শিহাবের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। কিন্তু কেউ সে কথা বলতে পারেনি
কখনো তাকে। তবে শিহাব মনে মনে ভালবাসে
সাদিয়াকে।
একদিন ভার্সিটি শেষে, ফেরার পথে ইভা শিহাবের পথ আটকাল।
-শিহাব, একটু সময় হবে তোমার?


-হুমমম…. বল।
-আমার সাথে একটু নির্জনে আসতে
পারবে।
-আচ্ছা চল, ক্যান্টিনের পেছন
দিকে।”
ক্যান্টিনের পেছনে আসার পর
শিহাব বলল: কি কথা?
-ইয়ে… মানে, শিহাব, আমি কি
তোমার প্রেম ভিক্ষা পেতে
পারি?
ওদিকে সাদিয়া তাদেরকে
নির্জনে যেতে দেখে আড়াল থেকে
তাদের কথা শুনতে লাগল।
শিহাব বলল: কিন্তু ইভা, আমি তো
তোমাকে ভালোবাসতে
পারবনা। আমি সাদিয়াকে
ভালবাসি।
আড়াল থেকে শিহাবের কথা শুনে
সাদিয়ার চিত্ত যেন নেচে উঠল।
দৌড়ে গিয়ে শিহাবকে জড়িয়ে
ধরল। তারপর দু’জনের প্রেমের জয় হল।
আর ইভা? সে জলভরা চোখ নিয়ে
বাড়ির দিকে রওনা দিল।
প্রতিদিন সে দেখে শিহাব ও
সাদিয়ার হাসাহাসি,
মাখামাখি। অবাধ্য চোখ যেন
তার তখন আর বাধা মানেনা,
নিচের দিকে তাকিয়েই সে অশ্রুবর্ষণ করে। বুক থেকে প্রাণটা যেন বের হয়েও বের হতে চাইনা।
ছটফট করতে থাকে তার অবহেলিত হৃদয়।
তারপর একদিন। খুব ভোরবেলায় শিহাবের বাড়িতে গেল ইভা। জানলার ফুটো দিয়ে শেষবারের মতো দেখল শিহাবের ঘুমন্তমুখ। কত্ত মায়া তার মুখে! ইসস!!! একবার যদি ঐ
মুখে হাত বুলিয়ে আদর করতে পারত সে। শিহাব, এত অধরা হলে কেন
তুমি? কেন হৃদয়টা বুঝলেনা?
চোখের জল মুছতে মুছতে দ্রুতবেগে
চলে গেল।
,
,
ফোনের আওয়াজে ঘুম ভাঙল
শিহাবের। তার বন্ধু রনি ফোন
দিছে। ফোন রিসিভ করল সে।
-হ্যা রনি বল……
-শিহাব, খবর শুনেছিস??
-কি খবর??
-ইভা আত্মহত্যা করেছে।


-হোয়াট!!!!” চমকে উঠল শিহাব,
তাড়াতাড়ি চলে গেল সে ইভাদের
বাড়ি, লাশ এর দিকে তাকাল?
চোখদুটি তখনো খোলা ছিল। যেন
শিহাবকে দেখার সাধ তখনো তার
মেটেনি। শিহাব খুব বুঝতে
পেরেছে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী সে
নিজে। কিন্তু ইভা মৃত্যুর আগে একটা
কাগজে লিখে দিয়েছিল: আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। দয়া করে আমার লাশটাকে পোস্ট মর্টেমের নামে কাটাচেরা করতে দিওনা। মৃত্যুর পর অন্তত আর কষ্ট পেতে চাইনা।
বিদায় পৃথিবী। অতৃপ্ত হৃদয় নিয়ে ওপারে পাড়ি দিলাম।”
অজান্তেই চোখের কোণে জলের
রেখাপাত সৃষ্টি হল তার।
__________অশরীরী_______
ইভার মৃত্যুর পর শিহাব কিছুদিন
অ্যাবনরমাল জীবন কাটাল। তারপর
ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। দিন
কেটে যায়, মাস কেটে যায়, তারপর
বছর…….
এভাবে স্মৃতির পর্দা থেকে ইভার
চেহারাটা মুছে যেতে থাকল।
ইভা একদিন সবার ধূসর স্মৃতিতে
পরিণত হল।
শিহাব আর সাদিয়ার প্রেমও বেশিদিন টিকলনা। সাদিয়ার বিয়ে ঠিক করেছে কোন এক
বড়লোকের সাথে। সাদিয়াও রাজি এই বিয়েতে। বড়লোক, হাতছাড়া করলে শেষে কপালের
দোষ দিতে হবে। অনেক বুঝিয়েও সে ফেরাতে পারলনা সাদিয়াকে।
শিহাবের এখন খুব করুণ অবস্থা। এই
মেয়েটার জন্যই সে ইভাকে হারিয়েছে। আর আজ সাদিয়াও চলে গেল রাতের ঘুম হারাম করে। গভীর রাত। শিহাব লাইট অফ করে কাঁদতে লাগল। হঠাৎ একটু মৃদু বাতাস
য়ে গেল। শিহাব অনুভব করল কে যেন নরম হাতে তার চোখের জল মুছে
দিল।
-কে??” চিৎকার করে উঠল শিহাব।

তাড়াতাড়ি লাইট অন করল সে।
কোথাও কেউ নেই। কিন্তু রুমের ভেতরে তখনো একটা খুব পরিচিত পারফিউমের গন্ধ ছড়িয়ে আছে।

যে পারফিউমটা ব্যবহার করত ইভা…….