ঘটনাটি নড়াইল জেলা কালিয়া থানা কলাবাড়ীয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়াকে নিয়ে-
ঘটনাটি ঘটে ২০০৩ সালে।আগষ্ট মাসের মাঝামাঝি সময়। মাঠের পানি নামতে শুরু করেছে। এই সময় প্রচুর মাছ পাওয়া যায় মাঠের হালকা পানিতে। মাছ শিকার করাটা আমার (দিপু)কাছে নেশার মতো। প্রায় প্রতিদিন রাতে টর্চ লাইট, ট্যাঠা ( স্থানীয় একটি মাছ শিকারের অস্ত্র) ও ব্যাগ নিয়ে
বের হতাম। সেদিন বের হলাম রাত
সাড়ে নয়টার সময়।
বাড়ির পাশের
মাঠে নেমে হাঁটু পানিতে মাছ মারা
শুরু করলাম। ক্রমান্বয়ে সামনের দিকে
যাচ্ছি আর মাছ মারছি ও ব্যাগে
রাখছি। সেদিন দেখলাম অন্যদিনের
চাইতে অনেক বেশী মাছ, কৈ, শিং,
টাকি, শৈল। সাইজেও মাছগুলো বড় বড়।
অনেকক্ষন মাছ মারার পর হঠাৎ করেই
মনে হলো এতো মাছ মারলাম বাট
ব্যাগটা এমন হালকা লাগছে কেনো?
ব্যাগের দিকে টর্চ মেরে দেখলাম ব্যাগ
খালি, মাত্র একটি টাকি মাছের মাথা
পড়ে আছে ব্যাগের তলায়। শরীরটা
শিউরে উঠলো, হাত থেকে মাছের
ব্যাগ ফেলে দিলাম। ব্যাগ ফেলে
দিতেই চারপাশে কেমন যেনো
তুফানের মতো বাতাস শুরু হলো। মনে
হচ্ছিলো সব উড়িয়ে নিয়ে যাবে।
পাশের টর্চের আলো মরে বুঝতে চেষ্টা
করলাম আমি(দিপু)কোথায়। মনে হচ্ছিলো
জায়গাটা আমার অচেনা। কিছুক্ষন পরে
দূরের মৃদু আলো দেখে বুঝতে পারলাম
ওটা আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ৫
কিলোমিটার দূরের রাস্তা যার
পাশের মাঠে আমি দাঁড়ানো।
দ্রুত মাঠ ছেড়ে রাস্তায় উঠে কিছুক্ষন
দাঁড়ানোর পর দেখলাম আমাদের
ওদিকের একটা বেবিটেক্সি আসছে।
বেবিটেক্সির পিছনে উঠে দেখি আরো
দুজন লোক আছে। তাদের কাছে
জিজ্ঞেস করে জানলাম রাত দুইটা
পনেরো বাজে তখন।
অবাক হয়ে গেলাম যে আমি এতোক্ষন
মাছ মেরেছি, আর এতো দূরে কিভাবে
এলাম।
বাড়ির সামনে এসে বেবিটেক্সি
থেকে নেমে সোজা বাড়িতে গিয়ে
ঘরে না ডুকে আগে গোসল করে নিলাম।
এরপর ভিজা কাপড়ে ঘরে ডুকে কাপড়
চেইঞ্জ করতে যাবো এইসময় দরজায় ঠাস
করে একটি শব্দ হলো এবং কে যেনো
বললো আমাদেরকে আধপেট খাইয়ে চলে
এলি, তোর হাতে বড় হুজুরের তাবিজ
আছে বলেই বেঁচে গেলি। নাহয় আজ
তোকেই খেয়ে নিতাম।
এরপর থেকে আমি( দিপু) আর কোনদিন রাতের
বেলায় মাছ শিকারে বের হইনি।