আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়

কেউ আত্মহত্যা করেছে শুনলে আমার বিন্দুমাত্র কষ্ট বা মায়া হয় না। ভুলেও বলি না কেনো এমন করলো বা কত কষ্টে এই কাজ করেছে। সে মুসলমান হলে শুধু আফসোস হয়, সে আত্মহত্যা করে নিজেকে সারাজীবনের জন্য অভিশপ্ত করে দিলো।

আত্মহত্যা কখনোই কোনো কিছুর সমাধান হতে পারে না, না মানে না। আল্লাহ কখনো মানুষকে এতোটা অসহায় করে দেন না যে তার কাছে আত্মহত্যা ব্যতীত অন্য পথ থাকে না।

রাগ, জেদ, আবেগের বশে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল হিসাবে পরিগণিত হয়। আল্লাহ মানুষের জীবনে দুঃখ- কষ্ট দেয় ঈমানকে মজবুত করার জন্য।

যার জীবনে কোনো দুঃখ- কষ্ট নেই, তাহলে বুঝতে হবে আল্লাহ তার প্রতি নারাজ। আল্লাহ চান তার বান্দা শত বিপদেও ধৈর্য্য ধরে যেনো তাকেই স্মরণ করে।

সবচেয়ে বেশি হাস্যকর মনে হয় যখন কেউ ভালোবাসার জন্য আত্মহত্যা করে। মানে কি বলে তাদের ধিক্কার দিবো ভাষা খোঁজে পাচ্ছি না।

বাবা- মার ভালোবাসার সামনে দুনিয়ার সব ভালোবাসাই ফিকে। ভেবে দেখুন তো আপনি কথা বলতে পারতেন না, নিজের হাতে খাবার খেয়ে পারতেন না এমনকি চলাফেরাও না। তারও আগে থেকে মানে আপনার জন্মানোর আগে থেকে আপনার বাবা-মা আপনাকে ভালোবাসে।

২০/২২ বছরের এই স্বার্থহীন ভালোবাসার চেয়ে ২/১ বছরের প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসাই মুখ্য হয় যায়!!! মরার আগে কি একবারো ভাবে না যে, তার বাবা-মায়ের কি অবস্থা হবে।

যারা নিজের বাবা-মাকেই ভালোবাসতে পারেনি সে আবার অন্য কাউকে কিভাবে ভালোবাসতে পারবে।

ক্যারিয়ার নিয়ে ডিপ্রেশন, ছ্যাঁকাজনিত ডিপ্রেশন বা অন্য যা কিছুই হোক না কেনো; এগুলো থেকে বের হওয়ার হাজারটা উপায় আছে।

যদি মনে করেন এই পৃথিবীতে আপনার থেকে দুঃখী কেউ নেই, তাহলে একবার সেই মানুষটার কথা ভাবুন; যার কোনো থাকার জায়গা নেই কিংবা একবেলা খাবার পর আবার কখন খেতে পারবে তার নিশ্চয়তা নেই। আপনার কি মনে হয় আপনি তার থেকেও কষ্টে আছেন??

আপনি তো মরে গিয়েই বেঁচে যান, কিন্তু আপনার পরিবারেএ মানুষগুলোকে সম্মান নিয়ে বাঁচাটা হারাম করে দিয়ে যান। একবার ভাবুন তো আপনার বাবা-মা যখন রাস্তা দিয়ে যাবে, তখন যদি মানুষগুলো আপনার বাবা-মা দিকে আঙ্গুল তুলে বলে অমুকের ছেলেটা/ মেয়েটা আত্মহত্যা করছে।

বিশ্বাস করেন এই আঙ্গুল তুলে কথা বলাটা আপনার বাবা-মাকে জীবিত অবস্থায় হাজার বার মৃত্যু যন্ত্রণা দিবে।

যার জন্য বা যে কারণে মারা গেলেন তার কি কোনো সমাধান হয় বলুন? মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব বলার কারণ তো জানেনই। কারণ মানুষ তার বিবেককে কাজে লাগাতে পারে। আশরাফুল মাখলুকাতের এমন বোকামো সত্যিই মেনে নেয়া কষ্টকর।

জানেন তো আল্লাহ চাইলে সব পাপের ক্ষমা করে দিতে পারেন কিন্তু আত্মহত্যার কখনো ক্ষমা নেই। সারাজীবন জাহান্নামের অভিশপ্ত আগুনে জ্বলতে হবে। দুনিয়া থেকে তো কষ্ট আর অভিমান নিয়ে গেলেন, পরকালেও কোনো শান্তি পাবেন না।

নিজের মনের উপর নিয়ন্ত্রণ করা শিখুন। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো সবকিছু সহজে মেনে নিতে শিখুন। আপনার সাথে খারাপ কিছু হলে, আমার সাথে কেনো এমন হলো এটা না ভেবে ভাবুন এই খারাপটা ঘটনাটা না ঘটলে আপনার সাথে ভবিষ্যতে কি কি খারাপ ঘটতে পারতো।

যেকোনো মানসিক অশান্তিকর বিষয়ে অন্তত মায়ের সাথে কথা বলুন। মা কথাটাতেই শান্তি আছে। দুনিয়ার কেউ আপনার কষ্ট বুঝতে পারুক বা না পারুক, মা ঠিকই বুঝে নিবে।

জীবন আপনার কিন্তু তা আরো অনেকগুলো মানুষের সাথে সংযুক্ত। তাই এমনটা করার আগে হাজার বার ভাবুন। আত্মহত্যার ঠিক আগ মূহুর্তে ছোটো থেকে পরিবারের সাথে কাটানো প্রত্যেকটা আনন্দের সময়গুলোর কথা ভাবুন।

এরপরও যদি মরতে ইচ্ছে হয় তাহলে মরে যান। আপনার মত মেরুদণ্ডহীন অপদার্থকে এই পৃথিবীর দরকার নেই।