দৃষ্টির অগোচরে পর্ব ১ Bangla Love Story

ম্যাসেন্জারে ঢুকতেই আমার বউরের তিন মিনিটের একটা ভিডিও দেখতে পেলাম!
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একটা ছেলের সাথে অশ্লীল কাজ করছে!
এসব আমার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো লাগছে ।নিজের অজান্তেই চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগল।
হাতটা থরথর করে কাঁপছে!
ফোনটা হাত থেকে পড়ে গেল।
ভিডিওটা দেখার সাথে সাথে পায়ের নিচে মাটি সরে যেতে লাগল। শরীরটা ঘামতে লাগল।
ভিডিওতে মেয়েটা আমার বউ না শুধু, আমার ভালবাসার মানুষ। আমার প্রথম এবং শেষ ভালবাসা। ছোট থেকেই একে অপরকে ভালবাসি।
ভালবেসে একে অপরকে বিয়ে করি। এখনো কথাকে ঘরে তুলে নেয়নি।
ওকে এতটাই ভালবাসতাম কখনো ছুঁয়ে দেখিনি। আমার ভালবাসা পবিএ ছিলো।প্রতিরাতে নামায পড়ে কাঁদতাম। ওকে পাওয়ার জন্য কত কষ্টটাই না করেছি। এক নজর দেখার জন্য বৃষ্টিতে ভিঁজে রাস্তায় দাঁড়ায় থাকতাম। কখনো, ভাবিনি আমার সহজ সরল ভালবাসার প্রতিদান এভাবে পাবো ! শরীর টা ঘামছে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।
.
বুক ফেঁটে কান্না আসছে! আমার অবস্থা দেখে অফিসের পিয়ন, এক গ্লাস পানি এনে টেবিলে রেখে বললো” স্যার আপনার কিছু হয়েছে?”
.
নাহ্ কিছু হয়নি তুমি যাও বলে পানিটা খেয়ে নিলাম।
.
চুপ করে বসে আছি, হঠাৎ ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বাজতে লাগল চেয়েই দেখি, কথার মা ফোন দিয়েছে।
.
ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে বলল হ্যালো রাজ বাবা তুমি কি অফিসে?
.
হ্যাঁ মা আমি অফিসে! কেন কোন সমস্যা?
.
নাহ্ তেমন কিছু না আমরা তো বাসায় নেই তুমি যদি বিকালে আমাদের বাসায় যেতে, তাহলে ভালো হত।
কারণ কথা বাসায় একা, আর আমাদের বাসায় আসতে রাত আটটা বা নয়টা বাজতে পারে একটা পার্টি শেষ করে বাসায় যাবো।
কথাকে বলছিলাম, কথা বলল তার নাকি শরীর খারাপ!
.
“আচ্ছা মা আমি বিকেলে অফিস শেষ করে আপনাদের বাসায় যাবো “কথাটা বলে ফোনটা রেখে দিলাম।
.
মনে মনে স্হির করে নিলাম, আজকেই কথাকে এই ভিডিওটার কথা বলবো। বলবো কেন আমার সাথে মিথ্যা প্রেমের নাটক করলো। আমার ভালবাসার কী কোন মূল্য নেই! কেন করলো এমন আমার সাথে। ভাবতে পারছিনা হৃদয় কাঁচের টুকরার মতো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।আমাকে বললেই তো পারতে যে,আমাকে তাঁর পছন্দ না, আমি কষ্টকে চাঁপা দিয়ে হাসি মুখে সে ছেলের হাতে তুলে দিতাম।
.
কথার সাথে যতবারই দেখা করেছি, ওর জন্য বকুল ফুলের মালা, সাথে একগুচ্ছ গোলাপ নিয়ে যেতাম।এবারও কোন ব্যতয় ঘটল না?চোখের পানি মুছে কষ্টকে চাঁপা দিয়ে নিউমার্কেট মোড় থেকে বকুল ফুল আর একগুচ্ছ গোলাপ নিয়ে গেলাম। মনে মনে ভেবে নিলাম কথাকে বকুল ফুল আর গোলাপ গুচ্ছ দিয়ে জিজ্ঞেস করব কেন করলো এমন আমার সাথে! সবকিছু শেষ করে দিয়ে আসবো।
.
রাস্তায় জ্যামে লেট হয়ে যায়। কথাদের বাসায় পৌঁছাতে সন্ধ্যা লেগে যায়!
বাড়িতে কেউ নেই।
তাই সোজা উপরে চলে গেলাম।
কথা যে ঘরে থাকে সেই ঘরের দরজার কাছে গেতেই আমার হাতের ফুলগুলো সব পড়ে গেল। শরীরটা অবশ হয়ে যাচ্ছে
আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিনা।
এটা কী আমার সে কথা যে আমাকে পাওয়ার জন্য কাঁদতো।
এটা কী সে কথা যে আমার জন্য রোযা রাখতো।
আমার সাথে একদিন ফোনে কথা না হলে ব্যাকুল হয়ে যেত।এটা কি সে কথা যে আমার সাথে কথা বলার জন্য বাইরে ঘুরতে যেতো না। নাহ্ কিছু ভাবতে পারছিনা। কষ্টে বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে বুকের ভিতর কেউ ছুরি চালিয়ে দিচ্ছে। কলিজা টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এদিকে,
ঘরের ভেতর থেকে আওয়াজ আসছে” বেবী অার একটু কাছে আসো না প্লিজ”। তোমাকে আজ মন ভরে আদর করবো। চিরদিন মনে থাকবে আমার কথা। (ছেলে কণ্ঠে”)
.
যাহ্ দুষ্ট আমার বুঝি লজ্জা করে না ?
আমার সব তো দেখে নিলে।তবে তুমি বরাবরের মতোই দুষ্ট! যাহ্ বলে বুঝানে যাবেনা! (কথা)
.
“তোমার সৌন্দয্যে আমি যে পাগল”ফিস ফিস আওয়াজ আসছে রুম থেকে। আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না ভেতরে কি হচ্ছে। মনে হচ্ছে ছুরি দিয়ে কেউ কলিজাটা ক্ষত বিক্ষত করে ফেলছে। মানুষ এতটা নিজ কেমনে হতে পারে। মন চাচ্ছে দরজাটা ভেঙে ফেলি লাথি মেরে। কিন্তু পারলাম না, আমার দৃষ্টির অগোচরে যেসব করে আনন্দ পাচ্ছে। তাতে আমার ব্যাঘাত ঘটনার প্রয়োজন নেই।সুখে থাকুক হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া মানুষ গুলো! শার্টের হাতা দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলাম কথাদের বাসা থেকে।
.
রাতে আর কিছু খায়নি।কথার প্রতারণা গুলি বিষের ছুরির মতো আঘাত করছে হৃদয়ে। হঠাৎ ফোনটা বাজতেছে,চেয়েই দেখি কথা। কয়েকবার রিং হওয়ার পর ফোনটা বন্ধ করে রেখে দেয়।মা এসে রাতের খাবার জন্য ডেকে দেয়।
.
রাতে খাবার সময় মা-বাবাকে বলল, কথাকে আমাদের বাড়ি তুলে আনতে। কথার পড়াশুনা শেষ। আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় ৬ মাস আগে। বিয়ের পরই কথা, মেসে চলে যায়। মেডিকেলে পড়ে তাই ওর সাথে ফুলশর্য্যাটাও হয়নি। কথ আশায় ছিলাম রাএিটার জন্য কিন্তু এখন ঘৃণা হচ্ছে নষ্টা মেয়ের প্রতি। মা-বাবাকেই কথার কার্যকলাপ কিছু বলতে পারছিনা। মা -বাবা সিদ্ধান্ত নিলো সামনে শুক্রবারে কথাকে তুলে নিয়ে আসবে। আমি কিছু বললাম না হালকা খেয়ে চলে আসলাম।
.
পরের দিন ঘুম থেকে উঠতেই দেখি কথা কিচেনে মায়ের সাথে রান্না করছে। ছলনাময়ীটাকে দেখে শরীরটা রাগে জ্বলছে।দেখতে মন চাচ্ছে না নষ্ট মেয়েটাকে।
.
রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। হঠাৎ কারো স্পর্শে, ফিরে তাকাতেই দেখি কথা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে, কিছুই জানেনা। নিজের দেহটাকে অন্যজনকে দিয়ে আমার কাছে আসছে, ভালবাসা দেখাতে।
” আমার জানপাখি রাগ করেছে আমার উপর? কাল বাসায় গিয়ে ফুল দরজার সামনে ফেলে রেখেছো। আমাকে বলবে না তুমি আসতেছো।একটা বার ডাকও দাওনিস তুমি যখন বাসায় গিয়েছিলে তখন আমি ঘুমিয়েছিলাম।এই জন্যই আমার জানপাখি ফোন ধরা লাগে না। কাছে আসো আদর করি ( কথা)
.
কথার গুছানো মিথ্যা কথা শুনে মনে হচ্ছে ঠাস ঠাস করে চড় বসিয়ে দেয়।না পারলাম না কোথায় যেন আকঁটে গেলাম!
.
” কি হলো কথা বলছো না কেন? সামনে শুক্রবারে মা-বাবা আমাকে বউ করে একেবারে নিয়ে আসবে সেদিন রাতে গোমরা মুখোটাকে আদর করবো। এখন যায়!
কথাগুলো বলে কথা চলে গেল। নিজের উপর অনেক রাগ হচ্ছে না পারছি কিছু বলতে না পারছি কিছু সইতে!
.
দেখতে দেখতে আজ আমার বাসর রাত। কথা বউ সেজে বসে আছে। কতরাত স্বপ্ন দেখেছি এই রাতটি নিয়ে কিন্তু আজ সব স্বপ্ন মরীচীকা। স্বপ্নগুলো রং হারিয়েছে। বাহিরের বেলকুণিতে দাঁড়িয়ে মেঘের আড়ালে ঢেকে যাওয়া চাঁদটাকে দেখছি। আমার জীবনের মতো চাঁদটার মেঘের আড়ারে পড়ে গেছে। হঠাৎ কাঁধের উপর কারো হাতের ছোঁয়া পেলাম। চেয়েই দেখি বাবা।
.
” রাজ, মেয়েটা বাসর ঘরে একা, রাত দুইটা বাজে এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে ঘরে যা বাবা”।
.
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি, রাত আড়াইটা ছুই ছুই! ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও বাসর ঘরে গেলাম। রুমটা কি সুন্দর করে সাজানো। তবে রুমটাকে কিসের যেন অভাব মনে হচ্ছে তা হলো ভালবাসার। যাকে সবটা দিয়ে ভালবাসতাম সেই প্রতারণা করেছে। মনে মনে স্হির করে নিলাম ফ্লরে কাটিয়ে দিবো এই ভেবে, বিছানায় গিয়ে অনেকটা অবাক হলাম! কথা সেন্সলেন্স হয়ে পড়ে আছে।মা-বাবাকে ডাকদিলাম।
.
মা-বাবা সবাই মিলে কথাকে হসপিটালে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার যাহ্ বললো তা শুনার মুটেই প্রস্তুত ছিলাম নাহ্!
.
“আপনারা মিষ্টি খাওয়ান, মিঃ রাজ আপনার বউ মা হতে চলেছে”।
ডাক্তারের কথা শুনে, থমকে গেলাম। নাহ্ এ হতে পারে না। পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে। কথার সাথে আমার কখনো শারীরীক সম্পর্ক হয়নি! বুঝতে বাকি রইল না কথার গর্ভের সন্তান টা “”””””

আমার না।কি এমন পাপ করেছিলাম, যার জন্য আল্লাহ্ আমার কপালে এমন কিছু রাখল।কথা কেন আমার সাথে এমন করলো! কথা তো আমাকে পাওয়ার জন্য কাঁদতো রোযা রাখতো! মাঝরাতে উঠে নামায পড়তো। না এ হতে পারে না। স্বপ্ন দেখছি না তো। কলিজাটা ফেঁটে যাচ্ছে।

.

মা-বাবা কেমন করে যেন তাকাচ্ছে! নিজেকে তাদের কাছে ছোট মনে হচ্ছে!

.
” রাজ এমন নষ্টা মেয়েকে নিয়ে আমার বাড়ি যাবি না। একা যদি যেতে পারিস যাবি। যে মেয়ে বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায় তাকে সে আমাদের বাড়ির বউ হতে পারে না”।কথাটা বলে বাবা, রিত্ত আর মাকে নিয়ে চলে গেল।

.

কথার মা-বাবা মাথাটা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কথার দিকে চেয়ে দেখি বেডে শুয়ে কান্না করছে। কথার চোখে জল দেখে নিজের অজান্তেই চোখে জল এসে গেল। বুকটা চিন চিনে ব্যাথা করছে। নিজের অজান্তেই চোখে অশ্রুকণা ভর করছে। কথা এখনো কাঁদছে আমি জানি এখানে থাকলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারবে না।

.

কথার মা-বাবাকে বললাম” আপনারা আমাকে ক্ষমা করবেন। কথাকে দেখে রাখবেন” বলে বাসায় চলে আসলাম।

.

দুই দিনের মাঝে কথার কোন খুঁজ নেয়নি। সবাই জানে কথা নষ্টা মেয়ে। নষ্টা মেয়ের নামটা নেওয়াও পাপ।মনটা খারাপ লাগছে। এলাকার লোকে বলছে” রাজ কি বিয়ে করলো,বাসর রাতেই বাবা হতে যাচ্ছে”।এই সব বলে হাসি টাট্টা করে। বাবা আমার সামনে কিছু বলতেও পারে না!

.

নিজেকে খুব অসহায় লাগে, যাকে নিয়ে এতটা স্বপ্ন দেখেছিলাম, সে স্বপ্নটা ভাঙা কাঁচের মতো টুকরো টুকরো করে দিলো।

.

রাতে শুয়ে শুয়ে কথার আগের সেই পাগলামী গুলো মনে করছি! হঠাৎ ক্রিং ক্রিং করে ফোনটা বেঁজে উঠল। ফোনটা ধঁরতেই ওপাশ থেকে কেউ বলল” বাবা রাজ কাল একটু আমাদের বাসায় আসবে?”

.

কথাটা শুনে বুঝতে বাকি রইল না কথার বাবা ফোন করেছে। আঙ্কেলের অনুরোধে না করতে পারলাম না!

.

পরদিন সকালে নাস্তা করে, কথাদের বাসায় রওয়ানা দিলাম। বাসার নিতে যেতেই দেখতে পারলাম বেলকুণীতে খোলা চুলে দাঁড়িয়ে আছে কথা। একসময় কথার খোলা চুলগুলো দেখার কতবড় পাগল ছিলাম আজ অসহ্য লাগছে। মনে মনে ভাবছি চলে যায়, এ বাড়িতে আর নয়। পাপীটার মুখ দেখতে মন চাচ্ছে না! হঠাৎ আঙ্কেলের ডাক ” বাবা আসছো তুমি? আমি জানতাম তুমি আসবে”।

.

ঘরের ভেতরে গিয়ে বসে আছি। কেউ কোন কথা বলছে না। কথা আমাকে দেখে অপরাধীর মতো রুমে চলে গেল।আমার সামনে কথার বাবা বসে আছে।

.

নীরবতা ভেঙে বললাম ” কিছু বলবেন আঙ্কেল?”

.

বাবা তোমাকে কীভাবে যে বলি, তাঁরপরও বলতেই হবে। ” জানো বাবা যেদিকে চায়, সেদিকেই সবাই আঙুল তুলে আমাকে দেখিয়ে দিয়ে বলে নষ্টা মেয়ের বাবা যাচ্ছে! পারছিনা আত্মহত্যা করতে, আত্মহত্যা মহাপাপ না হলে হয়তো আত্মহত্যার পথই বেছে নিতাম! বাবা আমার মেয়েটা আজ তিনদিন ধরে একফোঁটা পানিও খাচ্ছে না। শুধু বালিশে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে। জানো বাবা আমার মেয়েটা কাল গলায় দড়ি দিয়েছিল! তার মা যদি না দেখতো তাহলে, মেয়েটা মারা যেত। বাবা তো মেয়ের মৃত্যু দেখতে পারবো না বলে দরজা ভেঙে বাঁচিয়েছি। বাবা জানিনা বিয়ের আগে আমার মেয়ের তোমার সাথে কিংবা অন্য কারো সাথে শারীরীক সম্পর্ক হয়েছে কিনা? সব আল্লাহ্ জানে। বাবা আমার মেয়েটার প্রাণ ভিক্ষা চায়। বাবা আমার মেয়েটাকে সব ভুলে তোমার পায়ের নিচে জায়গা দাও।

.

আঙ্কেল কি বলছেন? আপনি যাহ্ বলছেন ত্ কোনভাবেই সম্ভব না।( কথাগুলো দাঁতে দাঁত চেপে বললাম)

.

বাবা রাজ আমি তোমার পায়ে পড়ি, আমাকে অপমানের হাত থেকে রক্ষা করো! আমার মেয়েটাকে বাচাও।

.

আঙ্কেল কি করছেন আপনি?

.

আমি যাহ্ করছি, ঠিকই করছি। যেদিন তুমি বাবা হবে সেদিন বুঝবে কেন এমন করছি! বাবা আমার মেয়েটাকে মেনে নাও। বাঁচবে না আমার মেয়েটা!আর বাবা তোমাকে জোর করবো না। ঠিক করে নিয়েছে, লোকের মুখে ওমন কথা শুনার চেয়ে বিষ খেয়ে আমি আর তোমার আন্টি আত্মহত্যা করমু। আর পারছিনা! বাবা তুমি যদি এই বাড়ি থেকে কথাকে বউ হিসেবে তোমাদের বাড়ি নিয়ে না যাও তাহলে তুমি বের হওয়ার পর এই বিষ( বিষ দেখিয়ে) খেয়ে আত্মহুতি দিবো। ( কান্না করে দিয়ে)

.

আঙ্কেলের মুখের দিকে চেয়ে না করতে পারলাম না আর। মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলাম!

.
আঙ্কেল চোখ মুছে খুশি মনে চলে গেলো। আঙ্কেল চলে গেলে, কথার রুমে গিয়ে ঢুকতেই অবাক হলাম রুম ভর্তি আমার ছবি।কথা বিছানায় শুযে কাঁদছে।নিজের অজান্তেই কথার মাথায় হাত রাখলাম! কথা আমার হাতের স্পর্শ পেয়ে কেমন যেন তাকালো! চোখ দুটি ফুলে গেছে। চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে। বুকের ভেতরটা হাহাকার করছে, কথাকে দেখে মনে হচ্ছে নিঃশ্বাপ একটা মেয়ে।কিন্তু এই মেয়েটায় আমার বিশ্বাসটাকে খুন করেছে।খুন করেছে আমার পবিএ ভালবাসাকে! তবুও কেন যানি দূরে সরে যেতে পারছি না।হঠাৎ কথা পায়ে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগল” রাজ আমাকে ক্ষমা করে দাও!আল্লাহর কসম আমি কারো সাথে শারীরীক রিলেশন করিনি! কেমনে আমার গর্ভে সন্তান এলো সত্যি জানিনা। আমি তোমায় ভালবাসি নিজের থেকে বেশি! কিন্তু এখন তুমি কেন দুনিয়ার কেউ বিশ্বাস করবে না যে আমি নষ্ট না কারণ আমি জানি তোমার সাথে আমার কোন শারীরীক সম্পর্ক হয়নি! ( কথা)

.

কথার কথাগুলো বিষের মত লাগছে। তবুও আঙ্কেল কে বাঁচাতে কথাকে বুকে টেনে নিলাম।
.

সন্ধ্যায় কথাকে বাসায় নিয়ে গেলে, বাবা দুইজনকে দেখতেই ঠাস ঠাস করে থাপ্পর বসিয়ে দিয়ে বলতে লাগল” তুই আমার সন্তান হয়ে আমার সম্মানের কথা এক বারো ভাবলি না? নষ্টা মেয়েকে আমার বাসায় আনলি!

.

“বাবা কথা নষ্টা না”কথাটা শুনে সবাই অবাক হয়ে তাঁকালো আমার দিকে!!

.

“মানে কী বলছিস? তুই ঠিক আছিস”

.

মার মুখে এমন কথা শুনে ক্ষানিকটা অবাক হয়ে বলতে লাগলাম” মা আমার আর কথার মাঝে ১৫ দিন আগে দৈহিক সম্পর্ক হয়। প্রকৃত অর্থে কথাকে আমি একপ্রকার জোর করেই এসব করি! ওর কোন দোষ নেই, আমি বলেছিলাম এইসব যদি না করে আমি কথাকে বিয়ে করবো না! কথা বাধ্য হয়ে আমার সাথে নোংরামী করছে!

বাবা আমার গালে আবারো কয়েকটা কষে চড় বসিয়ে দিলো! যে বাবা কোনদিন আমাকে মারেনি, সে বাবা আজ আমার গালদুটি লাল করে ফেলেছে। বিনা অপরাধে। বাবা কথাকে নিয়ে রুমে যেতে বলে চলে গেল।

রাতে শুয়ে আছি, হঠাৎ কথার কান্নার আওয়াজ পেলাম! আমি বিছানা ছেড়ে ফ্লরে গিয়ে দেখি ফুপিয়ে কাঁদছে!

এই কথা কাঁদছো কেন? কথা আমার কথাটা শুনে পা দুটো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগল” তুমি সত্যি মহান, তোমার পায়ের নিচে আমাকে জায়গা দাও! একটা মানুষ এতোটা কষ্ট কেমনে লোকাতে পারে? আমার সব অপরাধ, অপবাদ তুমি নিজের ঘাড়ে নিয়ে নিলে,! সত্যি নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে যে তোমার মতো একটা স্বামী পেয়েছি। তুমি আরেকটা বিয়ে করো, তবুও আমাকে এ বাড়ি থেকে বের করে দিয়ো না! আমি তোমার কাছে কখনো স্বামীর অধিকার চাইবো না! দাসী হয়ে এ বাড়ি থেকে লাশ হয়ে বের হতে চায়! দিবে কী অধিকার টা?

.

আচ্ছা কান্না করোনা। এখন ঘুমাও! আর অনেক শীত ফ্লরে না শুয়ে বিছানায় এসো। কথা মাথা নাড়িয়ে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল! সকালে ঘুম থেকে উঠতেই দেখি, কথার মাথাটা আমার বুকে, চুলগুলো এলোমেলো।মনে হচ্ছে অপর্সী। হঠাৎ সাথীর ফোন। সাথী আমার অনেক ক্লোজ ফ্রেন্ড, সাথীকে ডাক্তার। সাথীকে কথার ব্যাপারে বলেছিলাম যে কথার এভারশন করাবো!

কিরে তোরা কখন আসছিস? ( সাথী)

আসতেছি ৩০ মিনিটের মধ্যে।

শোন তোর সেকেন্ড বউটার জন্য, চকলেট নিয়ে আসবি!

.
সাথীর কথার হেসে উওর দিলাম” আচ্ছা ছোটবেলার বউ জামাইয়ের কথা তোর এখনো মনে আছে?”

“হ্যাঁ”আছে তো!

আচ্ছা তুই থাকিস আসছি চেম্বারে। মনে মনে ভাবলাম, কথাকে কষ্ট দিবো,সাথীর সাথে ওর বয়ফেন্ডের মতো আচরণ করবো।

কথাকে নিয়ে বিকেলে হসপিটালে নিয়ে গেলাম।এভারশন করানোর আগে কথার ডিএন এ চেক করালাম। আর সাথীকে বললাম, “দেখ তো কথার কার সাথে, শারীরীক সম্পর্ক হয়েছে তাঁর ডিএন.এ বের করতে পারিস কিনা?

সাথী কিছুক্ষণ পর আমার কিছু টেস্ট দিলো! কথা যানে না কথাকে কেন নিয়ে এসেছি।

.এদিকে রির্পোট নিয়ে সাথী কেমন যেন মাথা ধরে বসে আছে!

ওই সাথী কি হয়েছে?

আমি ভাবতে পারছিনা,! কথার শারীরীক সম্পর্ক তোর সাথে হয়েছা। রির্পোট থেকে বুঝা যাচ্ছে কথার গর্ভে তোর সন্তান। আর তুই বলছিলি কথার সাথে তোর কোন শারীরীক সম্পর্ক হয়নি।

সাথীর মুখে এমন কথা শুনে মাখাটা ঘুরতে লাগল। আমি তো করিনি কোন শারীরীক সম্পর্ক কথার সাথে। সব কিছু ধাঁধার মতো লাগছে! কথার হাত ধরে বললাম! তুই না আমার বউ রির্পোট’টা আবার দেখ কোথায় ভুল হচ্ছে না তো। কারল কথার অশ্লীল ভিডিও দেখেছি!

সাথী আমার হাতে হাত রেখে বলল” আরে দুষ্ট জামাই, আমি দেখছি বিষয়টা!

এদিকে কথা রুমে ঢুকেই শুনে ফেলল” আরে আমার দুষ্ট জামাই আমি দেখছি বিষয়টা”সাথীর কথাটা শুনে কথা চোখ মুছতে মুছতে বের হয়ে গেল। আমি আর কিছু বললাম না, কারণ নষ্ট মেয়েদের কাছে এসব ব্যাপার না! তবে একটা জিনিস বুঝতেছি, কথার সাথে শারীরীক সম্পর্ক করেনি। তাহলে রির্পোটে কেন দেখাচ্ছে শারীরীক সম্পর্ক হয়েছে কথার সাথে আমার। নাহ্ কিছু ভাবতে পারছিনা।

.

এদিকে কথা ভাবছে,রাজ আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করল! আমাকে জানালে কি হতো?কথার নাম্বারে একটা ম্যাসেজ আসলো” প্লিজ ম্যাসেন্জারে গিয়ে দেখেন, আপনার স্বামী কতটা মহান”! কথা তাড়াহুড়া করে, ম্যাসেন্জারে ঢুকতেই অবাক হয়ে গেল” রাজ কে সে অনেক ভালো ভাবত, সেই রাজই কিনা, ডাক্তার মেয়েটার সাথে অশ্লীল কাজ করছে! কথার নিজের অজান্তেই বুক ফেঁটে কান্না আসছে! কথা হঠাৎ দেখলো ” যা দেখার মোটেই প্রস্তুত ছিল না” ডাক্তর সাথীকে রাজ “