কেন আপেলের এত গুনাগুন

একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যে ফলগুলো ক্রিসপি জাতীয় হয় সেগুলো খাওয়া দাঁতের জন্য খুব ভালো। এই ফলগুলো দাঁত পরিষ্কার করে এবং ব্যাকটেরিয়া রোধে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনারা হয়ত মনে করছেন যে, আপেল সব রোগ ভালো করে দেয় বা চিকিৎসকের কাছে যাওয়াও প্রয়োজন পড়ে না। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় যে, আপেলে প্রচুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা রয়েছে। এর ফলে রোগ হলেও ওষুধ কম ব্যবহার করতে হয়। মানে, আপেল হয়ত সব রোগের চিকিৎসা সম্ভব না হলেও এটি কম ওষুধ সেবনে সাহায্য করে।

আপেলের শক্তিগুণ

আপেল একটু দামী হলেও এটি সত্যিই খুব উপকারী। আপেল আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধক করতে সক্ষম এবং পুষ্টিকর একটি ফল যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। আপেলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ লবণ, শর্করা, আঁশ, পেকটিন এবং ম্যালিক এসিড। আপেলে শর্করা আছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ভিটামিনের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন—এ এবং ভিটামিন—সি। তবে ভিটামিনের উপস্থিতি আপেলের ছালে ও ছালের সাথে লাগানো মাংসল অংশেই বেশি। তবে মজার একটা কথা হল যে, আপেলের মাংসল অংশের চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি ভিটামিন আছে আপেলের ছালে। খনিজ লবণের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ফসফরাস ও লৌহ। আপেলে সোডিয়ামের পরিমাণ খুবই সামান্য।

আপেল হল শর্করা শক্তির উৎস। এই শর্করা জাতীয় খাদ্য আমাদের খাদ্যনালীতে ধীরে—ধীরে ভেঙ্গে হজম হয় বলে শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটা স্থিতিশীল থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আপেল খেলে তেমন কোন অসুবিধা সৃষ্টি করে না।

আপেলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

আপেলের বিশেষ গুণগুলো সম্পর্কে হয়তো আমাদের অনেকেরই ধারনা নেই। তাই চলুন আজ জেনে নিই আমাদের দেহের সুস্থতায় আপেলের উপকারিতা সম্পর্কে কিছু তথ্য।

আপেল ক্যান্সার প্রতিরোধক- আপেল সাধারণত ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। আপেলের মধ্যে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পেকটিন থাকে যা শরীরকে কোলন ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে। শরীরের ফুসফুসের ক্যান্সার ও লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধেও আপেলের ব্যাপক ভূমিকা আছে।

আপেল আপনার হার্ট ভালো রাখে- আপেলে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট জাতীয় উপাদানসমূহ, যা আপনার হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

ওজন নিয়ন্ত্রণে আপেল খান- আপনি যদি পারেন প্রতিদিন গড়ে ৩টি করে আপেল খান।  এতে করে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ সহজ হবে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে আপেল খাওয়া খুবী উপকারী

ক্ষুধা নিয়ন্ত্রন করে- আপেলে প্রচুর পরিমাণে কালরি থাকে। আপেলের জৈব এসিড উপাদান আমাদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রনে রাখে । তাই যদি আপনার বার বার ক্ষুধা লেগে থাকার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপেল খেয়ে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন ।

দাঁত ভালো রাখে আপেল- আপেলের রস আপনার দাঁতের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। ফলে দাঁত ভালো থাকে এবং দাঁত শক্ত ও মজবুত করে থাকে।

শরীরের ত্বক ভালো রাখতে আপেল- কিছু গবেষণাই দেখা গেছে যে, নিয়মিত প্রতিদিন আপেল খেলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়। সুধু তাই নয়, আপেল আপনার ত্বক মলিন রাখে এবং আপনার মুখের ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে থাকে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ-  আপেলে আছে প্রচুর পরিমাণে ফ্লেভনয়েড ও পলিফেনল যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রধান উপাদান । আর এই উপাদান দুটি আমাদের শরীরের DNA এর ক্ষতি রোধ করে এবং ক্যানসারও রোধ করতে সাহায্য করে থাকে।

হজম ক্ষমতা বাড়ে- আপনি যদি নিয়মিত প্রতিদিন আপেল খান তাহলে আপনার পাকস্থলীতে হজমের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরী হবে| ফলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

শরীরের হাড় শক্ত করেঃ সবুজ আপেলে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে বোরন যা হাড়কে শক্ত রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত আপেল খেলে শরীরের হাড় শক্ত এবং মজবুত হয়।

অ্যালঝেইমার্স প্রতিরোধে আপেল- আপনার বয়সের তুলনায় আপনাকে অনেক রুক্ষ লাগে। এটা খুবই বিব্রতকর একটা অবস্থা। আপনি যদি প্রতিদিন আপেল খান তাহলে বয়সজনিত জটিল অ্যালঝেইমার্স রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

পানিশুন্যতা দূর করে আপেল- আপেলে আছে প্রচুর পরিমানে পানি। যা তৃষ্ণা ও পানিশুন্যতা দূর করে এবং আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।

লিভার ও নালীর সমস্যা রোধ করে- আপেল সাধারণত আমাদের দেহের লিভারের যে কোন সমস্যা দূর করে ও পাশাপাশি শরীরের খাদ্য নালী, পরিপাক নালী ও অন্যান্য নালীর সমস্যা দূর করে থাকে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপেল খান- আপেলে পেকটিন নামের একটি উপাদান থাকে। পেকটিন সাধারণত ইনসুলিনের পরিমাণ ঠিক রেখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে থাকে।

আপেলে সাধারণত কোনো লবন নেই, তাই আপনি আপেল থেকে অতিরিক্ত লবন খাবার কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে| আপেল আপনার জ্বর হলে তা কমাতে সাহায্য করে থাকে, তাই জ্বর এর রোগীরা যদি বেশি করে আপেল খান তাহলে ভালো বোধ করেন|  আপেলের সাথে যদি আপনি মধু মিশিয়ে খেলে তা কফ দুর করে থাকে| সুধু তাই নয়, ডায়রিয়া হলে তা সারাতে সাহায্য করে| আমাদের শরীরে মাসেল টোন করতে সাহায্য করে ও ওজন কমায়। এমনকি Gastric এর সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।