মামাতো বোন যখন বউ পর্ব ৩

কারো ডাকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো আমি কন্ঠ টা বুঝতে না পেরে
ঘুম ঘুম চোখে গিয়ে দরজা টা খুলতেই তো আমি অবাক
কারন মামি
আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।
আমি মনে মনে ভাবতেছি,,,, মামি কিভাবে
বুঝলো যে আমি নেহাদের বাড়িতে এসেছি!
মামি রুমের মধ্যে ঢুকিয়েই বললো,
মামি: নয়ন,, তুমি এখানে আসছো কেন?
আমি: মামি না মানে!
নেহা: আন্টি মিম নয়নকে বাড়িতে যেতে মানা করছে! ( আমাকে আটকিয়ে দিয়ে নেহা বলে উঠলো)
মামি: কেন নয়নকে বাড়িতে যেতে মানা করছে?
নেহা: সেটা তোমার গুন ধর মেয়েকে গিয়ে প্রশ্ন করো??
মামি: কি হইছে নয়ন? তুমি বলো তো?
আমি: মামি!!
নেহা: নয়ন,, তুমি চুপ করো একটা কথাও বলবা না( আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে বললো)
মামি: আচ্ছা চলো এখন বাড়িতে!!
নেহা: না নয়ন,, এখন যাবে না
মামি: কেন যাবে না??
নেহা: আগে তোমার মেয়েকে ভদ্রতা শেখাও!! তারপর
আমি: চুপ করো না প্লিজ নেহা
নেহা: কেন চুপ করবো আমি
আমি: প্লিজ নেহা
নেহা: আন্টি যান আপনি ও আজ থেকে এখানেই থাকবে
মামি; আচ্ছা বাবা আমি গেলাম!! পরে আসবো
আমি: আচ্ছা মামি…
মামি চলে গেলো আমি ফ্রেশ হয়ে নিছে এসে সবাই মিলে নাস্তা
করে আমি আর নেহা কলেজ এর দিকে হাটা দিলাম
কিছুক্ষন পরে আমরা কলেজ এ চলে আসলাম। কলেজ এ ঢুকে দেখি
বাকি সবাই এসে পরছে। তাদের সাথে মিম ও আছে।
আমাকে দেখে
ওরা সবাই এগিয়ে আসলো।
মিম ওখানেই দাড়িয়ে ছিলো
সবাই এগিয়ে এসে বললো,,,
সবাই: কি খবর,,, কেমন আছো??
আমি: ভালো আছি… তোমরা কেমন আছো?
সবাই: ভালো😍
জয়া: নয়ন একটা কথা বলি( পাশ থেকেই আমার বন্ধু বলে উঠলো)
আমি: বলো
জয়া: আমার সাথে আজকে একটা যায়গায় যেতে হবে!!
নেহা: কোথায় নিয়ে যাবে ভাইয়া কে??
জয়া: যাবো তোমাদের সবাইকে পরে বলবো!!
নেহা: ওকে নিয়ে যাও,, তবে তাড়াতাড়ি ফিরে আসবা!!
জয়া: ওকে বাই অল!!
বলেই জয়া আমাকে নিয়ে চলে আসলো
জয়া ওর বাবার একমাত্র মেয়ে ওর বাবা এক জন বড় ব্যবসায়ী !!
কিছুদুর যাওয়ার পর আমি জয়া কে বললাম
আমি: কোথায় যাবো আমরা!!
জয়া: চলো না গেলেই দেখতে পারবে!!
আমি: ওকে চলো!!
আমি আর জয়া। জয়ার নিজের গাড়িতে করেই যাইতেছি। জানি না জয়া কোথায় যাইতেছে??
কিছুদুর যাওয়ার পর জয়া বললো
জয়া: শামিম কে চিনো??
আমি: হ্যা চিনি তো কেন!!
জয়া: ও কেমন রে??
আমি: মানে: ???
জয়া: ওর সভাব কেমন। ও দেখতে কেমন। আগে কি কোন রিলেশন ছিলো ওর
আমি: ও তো সব দিক দিয়েই ভালো। দেখতে ও তো ভালো!!
জয়া: ও
আমি: আচ্ছা বলো তো কেন?
জয়া: ও কে আমার ভালো লাগে তো তাই আর কি??
আমি: ও তা কতদিন থেকে চলতেছে??
জয়া: আরে ধুর ওখনো তো শুরুই হলো না!
আমি: তাহলে?
জয়া: এজন্যই তো তোমাকে নিয়ে যাইতেছি?
আমি: ও আমি তাহলে ঘটক?
জয়া: আরে না চলতো তুই?
আমি আর জয়া কিছুক্ষন পরেই এসে পৌছালাম!!
কোথা থেকে যেন শামিম বের হয়ে আসলো।
এসে আমাকে দেখেই বললো!!
শামিম: কিরে দোস্ত,, কেমন আছিস??
আমি: ভালো,, তুই?
শামিম: ভালো। তা তুই এখানে??
আমি: এই তো তোর লাভার নিয়ে আসলো আমাকে??
শামিম: আরে এখনো হয়নি তবে হবে??
আমি: ওই একি কথা আজ না হয় কালকে তো হবে??
জয়া: তোমাদের ফালতু কথা বাদ দিয়ে কাজের কথা বলো!!
আমি: কি খবর ম্যাডাম,, তেমার কি সয্য হইতেছে নাকি??
জয়া: আরে না চুপ করো তো তুমি?
আমি: আচ্ছা তোমরা কথা বলো, আমি একটু ঘুরে আসি!
জয়া: আচ্ছা যাও!
আমি সেখান থেকে চলে আসলাম। জয়া আর শামিম অন্য দিকে
হাটা দিলো!! আমি হাটতে হাটতে ভাবতেছি আমারও যদি এ রকম একটা গার্লফ্রেন্ড থাকতো তাহলে কতই না আমাকে ভালো বাসতো। কতই না আমার খবর রাখতো?
এসব ভাবতে ভাবতে আমার চোখের কোনে পানি চলে আসছে!
আসলে আমি তো গরিব! আমার তো কেউ নেই, তাই হয়তো বা আমাকে ও ভালোবাসার মত ও কেউ নাই?
এসব ভাবতে ভাবতে হাটতেছি! কিছুদুর যাওয়ার পর একটা কিছু দেখে আমি দাড়িয়ে গেলাম!!
ওটা ভালো করে দেখার জন্য এগিয়ে গেলাম…….
ওই খানে গিয়েই তো আমি থ হয়ে গেলাম আমি বোকার মত দাড়িয়ে গেলাম,
আমি ধিরে ধিরে সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম মিম আর রাফি মানে মিমের বয়ফ্রেন্ড রাফি

একটা চেয়ারে বসে দুজনের মুখ একদিকে করে, তারা ঠোটোর মধ্যে ঠোট লাগিয়ে কথা বলতেছে।

এই দৃশ্য টা দেখে তো আমি থ হয়ে গেলাম

কারন আমি কখনেই ভাবতে পারি নাই যে মিম এরকম ধরণের কিছু

কাজ করবে! আমি দুর থেকে দাড়িয়ে আমার পকেট থেকে ফোন

টা বের করে ওদের দুজনের কিছু অশ্লিল দৃশ্য ভিটিও করে রাখলাম।

ভিটিও করার সময় আমি লক্ষ করি নাই যে নেহা আমার পিছনে এসে দাড়িয়ে আছে।

আমি পিছনে ঘুরেই দেখি নেহা দাড়িয়ে। তাকে দেখে আমি বললাম

আমি: তু তু তুমি এখানে

নেহা: কেন আসতে পারি না আমি

আমি: পারো কিন্তু আমি এই যায়গায় তুমি কিভাবে জানলে?

নেহা: তোমার দেরি হইতেছে, দেখি আমি জয়াকে ফোন দিয়েছিলাম। সে বললো তুমি এখানে আছো তাই আমি চলে আসলাম

আমি: আচ্ছা চলে আসছো ভালো করছো চলো এখন চলে যাই।

নেহা: কি ভিটিও করলা

আমি: দেখতেই তো পারলা

নেহা: কেন ভিটিও করলা ওসব

আমি: কাজে লাগতে পারে

নেহা:আচ্ছা চলো এখন চলে যাই

বলেই নেহা আমাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলো। রাতে খেয়ে দেয়ে

আমি ভাবতেছি মানুষ এত খারাপ হয় কি ভাবে?

যদি মিম কে ওই ছেলেটা বিয়ে না করে তাহলে কি হবে ওর

এসব কিছু ভাবতে ভাবতে কখন যেন ঘুমিয়ে পড়ছি যানি না আমি

সকাল বেলা আন্টির ডাকে আমার ঘুম ভাঙ্গলো

ঘুম থেকে উঠে নেহা সহ নাস্তা করে কলেজ এর উদ্যেশে রওনা দিলাম

কলেজ এ এসে দেখে সবাই মিলে বসে গল্প করতেছে । পাশে মিম ও

বসে আছে কিন্তু ওর মনটা কেন যেন খুব খারাপ

তাই আমি মিম কে উদ্যেশ করে বললাম

আমি: জয়া তোমার ফ্রেন্ড মিম এর মন খারাপ কেন

জয়া: সেটা আমি কি জানি। তুমি ওকে প্রশ্ন করো

আমি: ও,তো বড়লোক, আমার সাথে কথা বলবে না। তুমি সেটা জানো না

জয়া: সেটাও ঠিক আছে!

পাশ থেকে হঠাৎ করেই মিম বলে উঠলো

মিম: আমাকে নিয়ে এভাবে কেউ হাসাহাসি করবা না

নেহা: আচ্ছা আপু তোমার কি হয়েছে বলবা

মিম: না কিছু হয় নাই

জয়া: আরে বলো না কি হয়েছে তোমার এত মন খারাপ কেন

মিম: বললাম তো কিছু হয় নাই আমার ( কান্না করতে করতে)

আমি সমস্ত রাগ অভিমান ভুলে মিম কে নিজেই প্রশ্ন করলাম

আমি: মিম বলবা কি না( আমি মিমের মন খারাপ দেখতে পারিনা। কেন যানি আমার খুব কষ্ট হয়)

মিম জয়াকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললো

মিম: ও আমাকে কালকে ছেড়ে চলে গেছে

জয়া: কে

মিম: রাফি

জয়া: কেন ছেড়ে গেলো তোমাকে।

মিম: কালকে দেখা করার পর আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে আমাকে থাপ্পর দিয়ে চলে গেছে

আমি: এত ভালোবাসা কই গেলো

মিম: নিশ্চুপ

জয়া: আরে চুপ করো না এমনি তেই মেয়েটা কষ্টে আছে

আমি: আচ্ছা চলো তো দেখি কোথায় রাফি

মিম: ওই যে ওই খানে দাড়িয়ে

আমি: আচ্ছা চলো তো

বলেই আমি মিমের হাত ধরে টান দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে রাফির সামনে গিয়ে বললাম

আমি: মি: রাফি ব্যপার টা কি

রাফি: কিসের ব্যাপার জানতে চান আপনি

আমি: মিমের সাথে কি হয়েছে আপনার

রাফি: দেখ ওর সাথে আমার চলে না। বলতে মিলে না ওর সাথে আমার যায় না তাই ওকে আমার সাথে মিশতে মানা করছি

আমি: এতো দিন যেটা ছিলো তাহলে সেটা কি ছিলো

রাফি: তখন ভালো লাগছিলো এখন আর আমাকে ভালো লাগে না তাই এই বিষয় নিয়ে আমি আর কথা বলতে চাই না

আমি: প্লিজ রাফি মিমের সাথে এত বড় বেইমানি করো না

রাফি: আপনি যাবেন এখান থেকে

আমি: রাফির হাত টা ধরে প্লিজ ও খুব কষ্ট পাবে

রাফি আমার হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো

রাফি: ঠাসস ঠাসস ঠাসস,,, তোকে না বললাম ওর হয়ে দালালি করবি না

মিম: চুপ করো রাফি আর বলতে হবে না অনেক বড় হয়ে গেছো তুমি

আমি: আবার ওর হাতটা ধরে বললাম প্লিজ রাফি বোঝার চেষ্টা করো

আমার হাতটা রাফির হাতে পড়ার সাথে সাথে ও হাতটা ছড়িয়ে নিয়ে আমার গালে জোড় করে একটা থাপ্পর দিতে ধরলো

এমনি মিম রাফির হাতটা ধরে জোড় করে রাফির গালে একটা
থাপ্পর বসিয়ে দিলো আমি মিমের কান্ড দেখে হা হয়ে গেলাম কারন মিমকে

কখনো এরকম রাগ করতে দেখি নাই। মিম ওকে থাপ্পর মারার পড় বললো

মিম: তোর মত ছোট লোক কে ভালোবাসাটাই আমার ভুল হয়েছে। তোর মত শত শত ছেলে আমার পিছনে পড়ে আছে আর তুই কোথায় ফকিন্নির বাচ্ছা

এই কথা বলেই মিম আমার হাতটা ধরে টানতে টানতে নিয়ে আসলো

আমি মনে মনে ভাবতেছি মিম এত সহজেই সব টা মেনে নিলো কিভাবে

এসব ভাবতে ভাবতে আমরা আমাদের ফ্রেন্ড দের কাছে চলে আসলাম

চলে আসতেই সবার সামনে দাড়িয়ে মিম বললো

মিম: চলো আজকে সবাই কে ট্রিট দিবো

সবাই: কি বললি তুই

মিম: ট্রিট দিবো

সবাই: মাথা তোর ঠিক আছে তো

মিম: হুম ঠিক আছে। ও চলে গেছে তাতে কি ওর থেকে ভালো পাবো চলো তো এখন

মিমের কথা শুনে আমরা সবাই হা হয়ে গেলাম এই মেয়ে বলে কি নতুন নাকি পাবে আবার ওর চেয়ে ভালো

আমরা সবাই মিলে হোটেল এ নাস্তা করে সবাই সবার বাসায় চলে আসলাম

আমি আসার সময় আমাকে মিম ডাকছিলো ওদের বাসায় যাওয়ার জন্য কিন্তু নেহা আমাকে যেতে দেই নাই

বাসায় এসে রাতে খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়লাম

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আমি বাসার ছাদে গেলাম

আর ছাদে গিয়ে সামনে তাকাতেই তো অবাক হয়ে গেলাম…………

চলবে………

(পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন)

………………………………

আপনার লেখা সরাসরি আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারেন  আমাদের এডমিনগণ আপনার লেখা যাচাই বাঁচাই করে আমাদের ব্লগে মূল পাতাই আপনার লেখাটি প্রকাশ করবেন ।

হেড এডমিন এর fb.com/YousufRanaDhali