কারাগার ভালো বউয়ের চেয়ে !

স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি চরমে পৌঁছেছে। ঘরে নিত্য অশান্তি। এমন পরিস্থিতিতে কী করতে পারেন? যা–ই করুন না কেন, সম্প্রতি ভারতে স্ত্রীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নিজেকে বন্দী করতে সোজা থানায় গিয়ে হাজির হয়েছেন এক ব্যক্তি। এতে অবশ্য কারাগারে ঠাঁই মেলেনি। তাই উপায় না দেখে পুলিশের মুখে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করেছেন তিনি। এতে যদি কারাগারে ঠাঁই হয়, এই আশায়। তবু স্ত্রীর সঙ্গে আর এক মুহূর্তও নয়।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাজস্থানের জয়পুরের শিপ্রাপথ থানায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ব্যক্তির নাম যোগেশ গোলয়া। পরে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বছর ত্রিশের যোগেশকে কারাগারে পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকালে যোগেশ শিপ্রাপথ থানায় গিয়ে তাঁকে কারাগারে আটকে রাখার আরজি জানান। এর কিছুক্ষণ পর যোগেশের স্ত্রীও থানায় গিয়ে মামলা করার কথা বলায় বিপত্তিটা বাধে।

থানায় পুলিশের কাছে যোগেশ বলেন, ‘আমি কারাগারে যেতে চাই…আমি আমার স্ত্রীকে বেদম মারধর করেছি। দয়া করে আমাকে কারাগারের ভেতরে পাঠিয়ে দিন।’

থানার কর্মকর্তা মুকেশ চৌধুরী বলেন, ‘যোগেশ দোকানের মালিক। তিনি বৃহস্পতিবার সকালে থানায় এসে স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে চান। তিনি স্ত্রীকে মারধর করেছেন, এ অপরাধে কারাগারে থাকতে চান। এ সময় তাঁর স্ত্রীও থানায় যোগেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসেন। মুখোমুখি হয়ে যান স্বামী-স্ত্রী।’

মুকেশ চৌধুরী বলেন, এ সময় পুলিশের সহকারী কমিশনার দেশরাজ যাদব বুঝতে পারেন বিষয়টি পারিবারিক। তাই তিনি যোগেশ ও তাঁর স্ত্রী শান্ত করে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাড়ি ফিরে গিয়ে ঝামেলা মিটমাটের পরামর্শ দেন। কিন্তু যোগেশ স্ত্রীর সঙ্গে বাড়ি ফিরে যেতে নারাজ। এ কারণে যোগেশ একপর্যায়ে দেশরাজের মুখে ঘুষি মারেন। এতে তিনি আহত হন, ঠোঁট দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। তাঁকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। এদিকে পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘুষি মেরে বেশ শান্ত ভঙ্গিতেই ছিলেন যোগেশ। হয়তো তিনি জানতেন, পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘুষি মেরে আহত করার অভিযোগে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হতে পারে। অবশেষে তাঁকে কারাগারেই পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, থানায় গিয়ে শুরু থেকেই যোগেশ বলছিলেন যে স্ত্রীর অত্যাচারে তিনি অতিষ্ঠ। তাই আর স্ত্রীর সঙ্গে নয়। এবার তিনি যেকোনো উপায়েই হোক না কেন, কারাগারে থাকতে চান। কিন্তু পুলিশ বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিতে চাওয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘুষি মেরেছেন। আর এ কারণেই পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি এখন কারাগারে।