প্রাইভেট হাসপাতালে ডাক্তার

একজন ডাক্তার বাংলাদেশে প্রাইভেট হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে কানাডায় গিয়ে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে সেলসম্যান হিসাবে যোগ দিলেন ।
স্টোরের মালিক জিজ্ঞেস করলেন- তোমার কোনো অভিজ্ঞতা আছে?
তিনি জানালেন- আমি দেশে একজন ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ছিলাম ।
চাকরির প্রথম দিনে তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করলেন । সন্ধ্যে ছ’টায় ছুটির সময় বস তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন- আজ তুমি ক’জন ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করেছ?
তিনি উত্তর দিলেন- আমি আজ সারাদিনে একজন ক্রেতার কাছে বিক্রি করেছি।
মালিক আশ্চর্য হয়ে বললেন- মাত্র একজন? এখানকার প্রত্যেক সেলসম্যান দিনে ২০ থেকে ৩০ জন ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করে। তা তুমি কত ডলারের পণ্য বিক্রি করেছ?
তিনি বললেন- ৯৮,৭৬,৫৪৩ পাউন্ড ।
বস অবাক হয়ে বললেন- কী! এটা তুমি কিভাবে করলে?
তিনি বললেন- ওই ক্রেতার কাছে প্রথমে মাছ ধরার একটি ছোট্ট বড়শি বিক্রি করেছি । তারপর একটি বড় ও একটি মাঝারি বড়শি বিক্রি করলাম। এরপর একটি বড় ফিসিং রড আর কয়েকটি ফিসিং গিয়ার বিক্রি করলাম। তারপর আমি তাকে প্রশ্ন করলাম- আপনি কোথায় মাছ ধরবেন? তিনি বললেন- তিনি সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় মাছ ধরবেন। তখন আমি তাকে বললাম- তাহলে তো আপনার একটি নৌকার প্রয়োজন হবে। আমি তাকে নিচতলায় নৌকার ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। ভদ্রলোক সেখান থেকে কুড়ি ফুট দীর্ঘ দুই ইঞ্জিন-বিশিষ্ট নৌকা কিনলেন। এরপর আমি তাকে বললাম- এই নৌকাটি তো আপনার ভক্সওয়াগন গাড়িতে ধরবে না, একটা বড় গাড়ির প্রয়োজন! আমি ভদ্রলোককে অটোমোবাইল ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। আমার পরামর্শে তিনি নৌকাটি বহন করার উপযোগী একটি গাড়ি বুকিং দিলেন। তারপর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম- মাছ ধরার সময় কোথায় থাকবেন? তিনি জানালেন- এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা করেননি। আমি তাকে ক্যাম্পিং ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। তিনি আমার পরামর্শ মতো ছ’জন লোক ঘুমানোর উপযুক্ত একটি ক্যাম্প তাঁবু কিনলেন। সবশেষে আমি তাঁকে বোঝালাম- আপনি যখন এতোকিছু কিনেছেন, এখন কিছু খাবার ও পানীয় কিনে নেওয়া উচিত। ভদ্রলোক দু’শ’ ডলার দিয়ে কিছু মুদি-দ্রব্য ও দু’ কেইস বিয়ার কিনলেন!
এবারে স্টোরের মালিক একটু দমে গিয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে বলে উঠলেন- যে লোকটা একটি বড়শি কিনতে এসেছিল, তুমি তাকে দিয়ে এতোকিছু কেনালে!
ডাক্তার ভদ্রলোক বললেন- না স্যার, ওই ভদ্রলোক শুধুমাত্র মাথাব্যথার ওষুধ কিনতে এসেছিলেন। আমি তাঁকে বোঝালাম- মাছ ধরলে মাথাব্যথার উপশম হবে।
স্টোরের মালিক এবারে জানতে চাইলেন- এর আগে তুমি কী কাজ করতে?
তিনি বললেন- আমি বাংলাদেশে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের ডাক্তার ছিলাম। দরকার না হলেও তখন রোগীদেরকে নানা ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, ইকো, ইসিজি, সিটি স্ক্যান,এক্সরে, এম.আর.আই ইত্যাদি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতাম।
স্টোরের মালিক বললেন- তুমি এখন থেকে আমার চেয়ারেই বসবে আর আমি তোমার দেশে গিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে ট্রেনিং নিয়ে আসব…!

…………………………………………………………………………………