ত্বকের ক্যান্সারের লক্ষণ !

 

 

ক্যান্সারের মাঝে ত্বকের ক্যান্সার সাধারণত সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। কারণ বেশিরভাগ মানুষই জানেন না কীভাবে SPF(sun protection factor) ব্যবহার করতে হয়। SPF হচ্ছে সানক্রিন লোশনের এমন একটি ক্ষমতা যা সানবার্নের কারণে সৃষ্ট আলট্রা ভায়োলেট বি রশ্মিকে ব্লক করতে পারে। আলট্রা ভায়োলেট এ (UVA) থেকে আলট্রা ভায়োলেট বি(UVB) রশ্মি খুব সহজে ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে। সাধারণত আলট্রা ভায়োলেট এ (UVA) ও আলট্রা ভায়োলেট বি(UVB) রশ্মি ত্বকের ক্যান্সারের জন্য দায়ী।

তবে সবচেয়ে আশাব্যাঞ্জক দিক হচ্ছে এখন ত্বকের ক্যান্সার আগেই সনাক্ত করা ও চিকিৎসা করে সুস্থ হওয়া সম্ভব। Mona Gohora নামে আমেরিকান একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের মতে প্রায় ৯০% ত্বকের ক্যান্সার সম্পূর্ণ ভালো হয়। তবে তার জন্য অবশ্যই অনেকক্ষণ সূর্যের আলোতে থাকা বর্জন করতে হবে। কারণ আলট্রা ভায়োলেট রশ্মিতে বেশিক্ষণ থাকা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

এখানে কিছু ফ্যাক্টর রয়েছে যা ক্যান্সারের ঝুঁকির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। যেমন,

– নিকট আত্মীয় কারো যদি ত্বকের ক্যান্সার থাকে তাহলে আপনার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

– ফর্সা ত্বক, বিশেষ করে যারা স্বর্ণকেশী বা লাল চুলের অধিকারী।

– চিকিৎসা ক্ষেত্রে যাদের খুব বেশি এক্স-রে করতে হয়। (যদিও এটা বেশ অনেক বছর সময় লাগে)

– যেসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে প্রতিরোধক ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায় যেমন Lymphoma এবং HIV ইত্যাদি

– খারাপ ভাবে পুড়ে যাওয়া স্থান আলট্রা ভায়োলেট রশ্মিতে বেশিক্ষণ থাকলে

– ধূমপান করলে

উপরে উল্লেখিত কারণ গুলোর মাধ্যমে স্কিন ক্যান্সার কেন হয় তা হয়তো কিছু জানা গেলেও এর লক্ষণ গুলো সম্পর্কেও জানা উচিত আমাদের।

প্রথমত স্কিন ক্যান্সারকে এর প্রকারের উপর ভিত্তি করে ৩টি ভাগে ভাগ করা যায়। besal cell carcinoma(BCC), melanoma, এবং squamous cell carcinoma(SCC)। BCC টি সাধারণ ও সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। দেহের ত্বকের যেসব স্থানে সূর্য রশ্মি বেশি লাগে যেমন ঘাড়, মুখ, হাত ও বাহু। melanoma ক্যান্সার আঁচিল থেকে হয়ে থাকে এবং এটা প্রাণঘাতী অবস্থা। SCC ক্যান্সার অনেকটা BCC ক্যান্সারের মতোই তবে এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মুখ গহ্বরের ভেতরে, ঠোঁটে, গোপনাঙ্গের কাছাকাছি এবং কিছুটা বংশগত কারণে হয়।

যদিও কান্সারের অনেক ধরনের লক্ষণ থাকে তাই এক ধরণেরর কান্সারের লক্ষণের সাথে অন্য ধরণেরর লক্ষণ মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ত্বক বিশেষজ্ঞের Gohora এর দেয়া কিছু লক্ষণ এখানে উল্লেখ করছি-

– দেহে যদি কোন অপ্রতিসম আকৃতির আঁচিল থাকে তা আসলে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না।

– যদি দেহের আঁচিল খাঁজ কাটা অসমান প্রান্তের হয়। কারণ সাধারণ আঁচিল গুলো মসৃন হয়ে থাকে।

– যদি আঁচিলের রঙ বদলাতে থাকে বা সেটা দিন দিন গাঢ় হতে থাকে।

– যদি আঁচিলের আকৃতি দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং সেটা যদি পেন্সিলের পেছনে যে রাবার থাকে তার চেয়ে বড় হয়।

– যদি আঁচিল থেকে রক্তপাত হয় বা ব্যাথা লাগে।

– পায়ের উপর যদি কালশিটে পড়ে এবং তা ভালো হয় না সহজে।

– সূর্যের আলোতে বেশি থাকলে ত্বকে হওয়া ফুসকুড়ি সহজে ভালো হয় না। বেশির ভাগ সময়েই দেখা যায় যে এসব ফুসকুড়ি হলে একবার ভালো হয় তারপর আবার দেখা দেয়। কিন্তু কিছু যদি স্বচ্ছ ফুসকুড়ির মত হয় এবং সেটা মাস খানেক সময় পরেও ভালো না হয় তাহলে বুঝতে হবে সেটা হয়তো ফুসকুড়ি না অন্য কিছু।

– অনেক সময় ধূমপানের ফলে মুখের ভেতরে ঘা এর সৃষ্টি হয়।বেশির ভাগ মুখ গহ্বরের ভেতরের ক্যান্সার হয় মূলত squamous cell carcinoma(SCC) ধরনের।

– হাতের ও পায়ের আঙ্গুলের নখে কালো দাগের সৃষ্টি হয়। এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত দাগ তৈরি হলে সতর্ক থাকতে হবে।

– ত্বক যদি অত্যন্ত শুষ্ক, খসখসে এবং কাঁটা কাঁটা অনূভত হয়। অনেক সময় অ্যাকজিমা হলেও এরকম হয় তবে সাধারণ সমস্যা ও ক্যান্সার হওয়ার মাঝে পার্থক্য হলো ক্যান্সার হলে সাধারণ ঔষধ বা লোশনে কাজ হবে না।

উপরোক্ত লক্ষণ গুলোর মানে এই নয় যে এই লক্ষণ যাদের মাঝে থাকে তাদের স্কিন ক্যান্সার হবেই। তবে যদি এই লক্ষণ গুলো দেখা যায় তবে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে এবং দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

এই লিখাটি পড়ে আপনি যদি একটু হলেও উপকৃত হন, তবে লিখাটি শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের উপকৃত হবার সুযোগ করে দিন !

 

 

১টি মন্তব্য

  1. Pingback: bangla health tips